বান্দরবান ভ্রমন গাইড


সবুজ পাহাড়ে মেঘের লুকোচুরি কিম্বা পাহাড়ের মাঝে দিয়ে প্রবাহিত অগভীর নদী, ছোট বড় হরেক রকম ঝর্ণা অার বিকেলের মনমুগ্ধকর পাহাড়ি বাতাসে শরীর জুড়ানোর জন্য পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান-এর জুড়ি মেলা ভার। বর্ষার মৌসুমে মেঘ ছুয়ে দেখার বা খুব কাছ থেকে মেঘ দেখার অানন্দ পেতে পারেন এখানে। বলা যায়, বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘুছানো ট্যুরিজমের ব্যবস্থা রয়েছে বান্দরবানে। দেখার মত স্পটও রয়েছে অনেকগুলো।এখানে কৃত্রিমতা এবং প্রকৃতির এক মিশেল সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ রয়েছে পর্যটকদের জন্য। নীলগিরী নীলাচলের মত কৃত্রিমভাবে সৌন্দয্য বর্ধন করা স্পট যেমন রয়েছে তেমনি বগা লেক, রুমা, রেমাক্রি, জাদিপাই জলপ্রপাত, ঋজুক জলপ্রপাত, মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সসহ অনেক স্থান এবং প্রাকৃতিক ঝর্ণা রয়েছে যেগুলোর সৌন্দয্য পর্যটকদের বিমোহিত করে। তবে এই পোস্ট শুধুমাত্র বান্দরবান শহর কেন্দ্রিক (বান্দরবান শহর থেকে সহজে যাতায়াত করা যায় এমন) পর্যটন স্পটগুলো সম্পর্কে বলা হবে। বান্দরবানের গভীরের পর্যটন স্পটগুলো নিয়ে পরবর্তীতে পোস্ট দেওয়া হবে।
কিভাবে যাবেন?
------------
সরাসরি:
ঢাকা থেকে বান্দরবান সরাসরি এস. আলম, সাউদিয়া, হানিফ ও ইউনিকসহ বেশ কিছু এসি ও নন-এসি বাস যাতায়াত করে। যেগুলো দিয়ে অাপনি সরাসরি চলে যেতে পারেন বান্দরবান জেলা শহরে। বান্দরবান জেলা শহর থেকে বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পটে যাওয়ার জন্য রয়েছে চঁান্দের গাড়ী খ্যাত জীপ।
চট্রগ্রাম হয়ে:
ঢাকা থেকে চট্রগাম হয়ে যেতে পারেন বান্দরবান । এক্ষেত্রে প্রথমে অাপনাকে চট্রগ্রাম যেতে হবে সেখান থেকে বাসে করে যেতে হবে বান্দরবান। ঢাকা থেকে চট্রগ্রাম বাসে বা বিমানে করে যেমন যেতে পারেন তেমনি অল্প খরচে ট্রেনে করেও চট্রগ্রাম যেতে পারেন।সেক্ষেত্রে ভাড়া মোটামুটি নিম্নরূপ হবে।
ট্রেনে: এসি- ৩৬৫-৪৮০ টাকা। নন এসি-১৫০-১৬৫ টাকা। (চট্রগ্রাম পর্যন্ত)
বাসে: এসি- ৫৮০-৭৯০ টাকা। নন এসি-২০০-২৫০ টাকা। (চট্রগ্রাম পর্যন্ত)
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান
বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী নামক দুটি নন এসি বাস ৩০ মিঃ পর পর বান্দরবানের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি-৭০ টাকা।
[তবে চট্রগ্রাম বিশেষ কোন কাজ না থাকলে বা ট্যুর পরিকল্পনায় চট্রগ্রাম না থাকলে ঢাকা থেকে সরাসরি বান্দরবান যাওয়ার বুদ্ধিমানের কাজ হবে।]
কোথায় থাকবেন:
--------------
বান্দরবানে শহরের মধ্যে এবং শহরের অাশেপাশে বেশ কিছু হোটেল, কটেজ ও রিসোর্ট রয়েছে। অাপনি অাপনার পছন্দ ও বাজেট মাথায় রেখে পূর্ব থেকে খেঁাজ খরব নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন অাপনার থাকার জায়গা। নিচে কয়েকটি হোটেল সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়া হলো-
বান্দরবানের মেঘলাতে (মেঘলা একটি পর্যটন কেন্দ্র) পর্যটন কর্পোরেশনের একটি হোটেল আছে। ভাড়া রুম প্রতি ৭৫০ হইতে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। বুকিং ফোন: 0361-62741/ 0361-62742।
হোটেল ফোর স্টার: বান্দরবান বাজারে অবস্থিত। রুম ভাড়া সিঙ্গেল-৩০০ টাকা, ডাবল- ৬০০, এসি-১২০০ টাকা। বুকিং ফোন: ০৩৬১-৬৩৫৬৬, ০১৮১৩২৭৮৭৩১।
হোটেল থ্রী স্টার: বান্দরবান বাস স্টপের পাশে অবস্থিত। নীলগিরি যাওয়ার গাড়ী এই হোটেলের সামনে থেকে ছাড়া হয়। এটি ৮/১০ জন থাকতে পারে ৪ বেডের এমন একটি ফ্ল্যাট। প্রতি নন এসি ফ্ল্যাট-২৫০০ টাকা, এসি-৩০০০ টাকা। ফোন: ০১৫৫৩৪২১০৮৯।
হোটেল প্লাজা বান্দরবান: বাজারের কাছে অবস্থিত। রুম ভাড়া সিঙ্গেল-৪০০ টাকা, ডাবল- ৮৫০, এসি-১২০০ টাকা।ফোন: ০৩৬১-৬৩২৫২।
হোটেল হিল ভিউ: বান্দরবান মেইন রোডে বাস স্টপের পাশে অবস্থিত। ভাড়ার পরিমান কক্ষের অাকার ও ধরণ (এসি/নন-এসি) এর উপর নির্ভর করে ১২০০/- থেকে শুরু করে ৭০০০/- পর্যন্ত হয়ে থাকে। বুকিং-এর জন্য +88 01856699910, +88 01856699911 নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
উল্লেখিত হোটেলগুলো ছাড়াও শহরের মধ্যে এবং শহরের অাশেপাশে বেশ কিছু হোটেল, কটেজ ও রিসোর্ট রয়েছে।
খাবেন কোথায়
------------
বান্দরবান শহরে খাবার রেষ্টুরেন্টের মান তেমন ভাল নয়। তবে প্রত্যেক হোটেলের নিজস্ব রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। মোটামুটি মানের রেষ্টুরেন্টের মধ্যে সদর বিল্ডিং এর কাছে "ফিয়েস্তা" এবং বান্দরবান বাজারের কাছে "তাজিংডং" ট্রাই করতে পারেন।
কি কি দেখবেন:
নীলগিরি
--------
বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৪৭ কি:মি: দক্ষিণ পূর্বদিকে থানছি উপজেলার অংশে সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ৩০০০ ফুট উপরে অবস্থিত দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র নীলগিরি। এখানে পাহাড় আর মেঘের মিতালী চলে দিনরাত। ঘুরে আসতে পারেন ঐ মেঘের দেশে। মেঘ পাহাড়ের লুকোচুরি দেখতে হলে অাপনাকে জুন-জুলাই অর্থাৎ বর্ষাকালে যেতে হবে।এ সময় সুযোগ ঘটে হাত দিয়ে মেঘ ছেঁায়ারও। তবে নীলগিরি যেতে হবে অন্তত একরাত সেখানে থাকার মত সময় হাতে নিয়ে। সচরাচর পর্যটক দলগুলো সকালে বান্দরবান থেকে রওনা হয়ে দুপুরের দিকে গিয়ে পৌঁছায় এবং দুপুরের তপ্ত রোদে কিছু সময় সেখানে কাটিয়ে চলে অাসে। এ ধরণের ট্যুর প্ল্যানে নীলগিরির সৌন্দর্য দেখার সুযোগ থাকে না। বরং ভ্রমনের ক্লান্তি ও রোদে্র প্রখরতা অনেকের বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। নীলগিরির প্রকৃতি সৌন্দয্য উপভোগ করতে হলে হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে। এখানে বলা রাখা উচিত যে, নীলগিরি অাসা যাওয়ার পাহাড়ি উঁচু নিচু সপির্ল পথ অাপনাকে অন্যরকম রোমঞ্চকর অভিজ্ঞতা দিবে। অার অাসা যাওয়ার পথে বৃষ্টি অাপনার ভ্রমন অানন্দকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিবি।নীলগিরির পাশেই রয়েছে ক্ষু্দ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ম্রো সম্প্রদায়ের বসবাস যাদের বিচিত্র সংস্কৃতি দারুন উপভোগ্য।তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নীলগিরি থেকে সূর্যদয় এবং সূর্যান্ত দেখা যায়।
নীলগিরি যাওয়া হোটেল বুকিং ও অন্যান্য:
পর্যটকের জন্য বুকিং ব্যবস্থা এখানে:
পেট্রো এভিয়েশন
৬৯/২, লেভেল-৪, রোড-৭/এ, ধানমন্ডি, ঢাকা।
ফোন: মনতোষ মজুমদার-০১৭৩০০৪৩৬০৩ এবং হাসান সাহেদ-০১৭৩০০৪৩৬০৩।
কটেজ ভাড়া:
গিরি মারমেট: ৭৫০০ টাকা। (৮/১০ জন থাকা যাবে) ।
মেঘদূত: ৬৫০০ টাকা। (৮/১০ জন থাকা যায়)।
নীলাঙ্গনা: বঁাশের তৈরি এই কটেজের ভাড়া ৫৫০০ টাকা। ২ রুমে ৪/৬ জন থাকা যায়। কাপলের জন্য এক রুম ভাড়া নেওয়া যায় ২৭৫০ টাকায়। এখানে সারাদিনের খাবাের (ব্রেকফাষ্ট+লান্স+ডিনার) জনপ্রতি ৫০০ টাকা খরচ পড়বে। কটেজ বুকিং দেওয়ার সাথে খাবার বুকিংও দিতে হয়। অন্যথায় না খেয়ে থাকতে হবে।
কি ভাবে যাবেন?
বান্দরবানে সাধারণত চাঁন্দের গাড়ি খ্যাত ল্যান্ড ক্রুজার যাতায়াতের একমাত্র বাহন। নীলগিরিও যেতে হয় চঁান্দের গাড়ীতে করে। সময় লাগে যাওয়া-অাসা ৪ ঘঃ ৩০মিঃ। সেনাবাহিনী কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ায় আসা-যাওয়া-ছোট জীপ- ৫সিট-২৩০০ টাকা এবং বড় জীপ-৮সিট-২৮০০ টাকা। তবে ড্রাইভাররা আপনাকে বোকা বানানোর চেষ্টা করতে পারে।
স্বর্ণমন্দির
--------
স্বর্নমন্দিরটি মূলত: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপাশনালয়। নান্দনিক সৌন্দর্যের কারণে এটি অন্যতম একটি পর্যটন স্পট হিসাবে পরিগনিত হচ্ছে। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ এই স্বর্ণমন্দির বান্দরবান শহর থেকে ৪ কি:মি: উত্তরে বালাঘাটের একটি পাহাড়ের চূঁড়ায় অবস্থিত। এর নির্মাণশৈলী মায়ানমার, চীন ও থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ টেম্পলের অনুরূপ। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এ টেম্বল এর অবস্থান এবং নির্মাল শৈলীর জন্য পর্যটকদের নিকট বেশ অাকর্ষণীয়। এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেরা প্যাগোডার মধ্যে অন্যতম। এখানে পাহাড়ের উপর দেবতা পুকুর নামে একটি পানি সম্বলিত ছোট পুকুর রয়েছে। এখান থেকে অাশেপাশের সুন্দর নৈস্বর্গিকদৃশ্য দেখা যায়।দর্শনার্থীদের জন্য বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয় । প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০/-।
মেঘলা
------
বান্দরবান জেলা শহরের ৭ কি:মি: আগে মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি অবস্থিত। এটি সুন্দর কিছু উঁচু নিচু পাহাড় বেষ্টিত একটি কৃত্রিম লেককে ঘিরে গড়ে উঠেছে। ঘন সবুজ গাছ আর লেকের স্বচ্ছ পানি প্রকৃতি প্রেমিক পর্যটকদের কাছে একটি অাকর্ষনীয় স্থানে রুপান্তরিত করেছে। অন্যান্য অাকর্ষণের মধ্যে রয়েছে লেকের পানিতে হাঁসের প্যাডেল বোট অার এবং একটি মিনি চিড়িয়াখানা। এছাড়াও রয়েছে রোপওয়ে কার ও ২টি ঝুলন্ত ব্রীজ। এখানে সবুজ প্রকৃতি, লেকের স্বচ্ছ পানি আর পাহাড়ের চুঁড়ায় চড়ে দেখতে পাবেন ঢেউ খেলানো পাহাড়ী বান্দরবানের নয়নাভিরাম দৃশ্য। মেঘলার পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের বান্দরবান পর্যটন হোটেলটি। শহরের কোলাহল এবং জীবনের এক ঘেয়েমি কাটাতে নিরিবিলিতে স্বপরিবারে বেড়ানোর জন্য একটি অাদর্শ জায়গা এটি।
শৈল প্রপাত
---------
এটি চিম্বুক বা নীলগিরি অাসা যাওয়ার পথে পড়ে। বান্দরবান শহর থেকে মোটামুটি ৭ কি:মি: দূরে অবস্থিত এ স্থানটি মূলতঃ প্রাকৃতিক ঝর্ণার জন্য বিখ্যাত। তবে ঝর্ণা সবসময় প্রবাহমান থাকে না। বর্ষায় এর প্রবাহ ভালো থাকে। ঝর্ণা ছাড়াও ঝর্ণাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা বাজার অন্যতম পর্যটক অাকর্ষণ। এখানে বার্মিজ প্রোডাক্ট পাওয়া যায়, পাওয়া যায় পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর তৈরি কুঠির শিল্প পণ্য। অারো পাওয়া যায় পাহাড়ে উত্পাদিত সুস্বাদু মৌসুমী ফল।
নীলাচল
-------
বান্দরবান শহর হতে 5 কি:মি: দক্ষিণে সমুদ্র সমতল থেকে ১৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি পর্বত শীর্ষ। যেখান থেকে নীলাকাশ যেন তার নীল আচল বিছিয়ে দিয়েছে ভূমির সবুজ জমিনে। যে দিকে দুচোখ যায় অবারিত সবুজ ও নীল আকাশের হাতছানি। মুগ্ধতায় ভরে উঠে মন প্রাণ। নীলাচলের বিকেল সত্যিই অসাধারণ। মৃদুমন্দ বাতাসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই লীলাভূমিতে অাপনার মন ভরিয়ে দিবে সন্দেহ নেই। মেঘমুক্ত পরিস্কার অাকাশের দিনে নীলাচল থেকে দূরের চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দর দেখা যায়। বান্দরবান শহর থেকে নীলগিরি যাওয়ার রাস্তা এখান থেকে এলোমেলো ছুটেচলা সাপের মত দেখায়। এছাড়া অাশেপাশের ছোটবড় পাহাড় ও টিলার এবং উপত্যকা অসাধারণ দৃশ্য সত্যিই উপভোগ্য। সন্ধ্যার পর এখান থেকে একটি পরিপূর্ণ ভিউ পাওয়া যায় বান্দরবান শহরের যা অাপনার বান্দরবান সফরকে সার্থক করে দেবে।
মিলনছড়ি
--------
মিলনছড়ি বান্দরবান শহর হতে ৩ কি:মি: দক্ষিণ পূর্বে অবস্থিত। একটি চিম্বুক/নীলগিরি যাওয়ার রাস্তায় পড়ে। এখানে একটি পুলিশ ফঁাড়ি রয়েছে। পাহাড়ের অতি উচ্চতায় রাস্তার ধারে দাড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং সবুজ প্রকৃতির বুক ছিড়ে সর্পিল গতিতে বয়ে সাঙ্গু নামক মোহনীয় নদীটির দৃশ্য অসাধারণ।
চিম্বুক
-----
সমুদ্রপৃষ্ট হতে ২৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত চিম্বুক পাহাড় বান্দরবনের সবচেয়ে পুরানো পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে অন্যতম। বান্দরবান শহর হতে ২১ কি:মি: দক্ষিণ পূর্বে মিলনছড়ি এবং শৈল প্রপাত ফেলে চিম্বুক যেতে হয়। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ি দৃশ্য খুবই মনোরম। পাহাড়ের মাঝে আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এতে যাতায়াত চাঁদের বুকে পাড়ি জমানোর অনুভূতি দেয়। চিম্বুক যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদীর এলোমেলো ছুটে চলা চোখে পড়ে। উঁচু রাস্তা থেকে নদীটিকে সরু খালের মত দেখায়। চিম্বুক শীর্ষে একটি রেষ্টুরেন্ট এবং একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে।পাহাড়ের চূড়া থেকে দৃশ্যমান চারদিকের সবুজের সমারোহ প্রকৃতি প্রেমীদের এখানে টেনে আনে। চিম্বুকের পাশে রয়েছে ছোট একটি বাজার যেখানে পাহাড়ী খাবারসহ পাহাড়ী ফলফলাদি পাওয়া যায়।
সাঙ্গু নদী
-------
পূর্বের অতিউচ্চ পর্বত শীর্ষ থেকে সাঙ্গু নদী নেমে এসে বান্দরবন শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশে গেছে। বান্দরবান শহরের পূর্বে পাশে পাহাড়ী ঢালে বয়ে চলা সাঙ্গু নীদ দেখতে দারুন দৃষ্টি নন্দন।
ভ্রমন টীকা
======
বান্দরবানের সৌন্দয্য উপভোগ করতে চাইলে হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে সেখানে। নীলগিরি, নীলাচল এবং মেঘলায় দীর্ঘ সময় না কাটালে অাপনার ভ্রমনানন্দ অসম্পূর্ন থেকে যাবে। তবে, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক, স্বর্ণ মন্দির, সাঙ্গু নদী, মিলনছড়ি-র মত স্থানগুলো খুব বেশি সময় ধরে দেখার কিছু নেই। উপরের পর্যটন স্পটগুলো দেখার জন্য অন্তত পক্ষে দু’দিনের ট্যুর প্ল্যান দরকার। প্রথম দিন- মিলনছড়ি, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক দেখে নীলগিরি চলে যান যেখানে দিনের অবশিষ্ট সময়সহ রাত্রি যাপন করুন। দ্বিতীয় দিন- মেঘলা, স্বর্ণ মন্দির এবং নীলাচলে যেতে পারেন। মেঘলা ও স্বর্ণ মন্দির দিনের যেকোন সময় যেতে পারেন। তবে, নীলাচলে ভ্রমনের উত্তম সময় বিকেল থেকে সন্ধ্যা। দুপুরের তপ্ত রোদে নীলাচল উপভোগ্য নয়।
ভ্রমন কালে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড থেকে বিরত নিজেকে এবং নিজের দলের অন্যদের বিরত রাখুন।দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে অবদান রাখুন। অাপনার ভ্রমন উপভোগ্য এবং নিরাপদ হোক।

Comments

Popular posts from this blog

সাগরকন্যা কুয়াকাটা ভ্রমন

সেন্টমার্টিন ভ্রমনের আদ্যপান্ত